খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রমোদ ভ্রমণ করেছেন প্রকল্পের টাকায়। কেসিসির ১৬ জনের একটি টিম সম্প্রতি কক্সবাজারে ঘুরতে যান। এর আগে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কর্মকর্তারা একটি মিটিং করেছেন। এ সময় কেসিসির টিমটি খুলনার রূপসা নদীর তীরে উচ্চ শক্তির পাম্প হাউজ নির্মাণের প্রকল্পের জন্য চট্টগ্রামের মহেশখালে একই ধরনের একটি প্রকল্প সরেজমিন দেখেন। কেসিসির জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পের টাকায় সব ব্যয় বহন করা হয়েছে। বিষয়টি স্বীকার করেছেন কেসিসির একাধিক কর্মকর্তা। কক্সবাজার ভ্রমণে কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী (চলতি দায়ীত্ব) মশিউজ্জামান খান, প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবির উল জব্বার, নির্বাহী প্রকৌশলী (ক-অঞ্চল) শেখ মোহাম্মদ মাসুদ করিম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোল্লা মারুফ রশীদসহ ১৬ জন ছিলেন। ৯ অক্টোবর তিনটি মাইক্রোবাসে কেসিসির টিমটি খুলনা থেকে চট্টগ্রামে যায়। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় মহেশখালের মুখে স্লুইস গেট পরিদর্শন করেন। এরপর দুপুরে মিটিং শেষে রাতে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। কেসিসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনেকের পরিবারের সদস্যরা ছিলেন। তবে পরিবারের খরচ প্রকল্প থেকে নেওয়া হয়নি বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আরও জানা যায়, কেসিসির জলাবদ্ধতা দূর করতে রূপসা নদীর তীরে উচ্চ শক্তির পাম্প হাউজ নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। নদীতে জোয়ারের সময় বৃষ্টি হলে নগরের ভেতরের পানি নিষ্কাশনে এই পাম্প ব্যবহার করা হবে। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬৮ কোটি টাকা। রূপসা নদীর পাইকারি মাছ বাজারের কাছে সাহেবখালী খালের ওপর এটি নির্মাণ করা হবে। স্টেশনটিতে তিনটি পাম্প এবং তিনটি স্লুইস গেট বসবে। প্রতিটি পাম্পে মিনিটে প্রায় ৩ লাখ ৩০ হাজার লিটার পানি নিষ্কাশন করার সক্ষমতা থাকবে।দেশের একমাত্র চট্টগ্রামের মহেশখালে এমন পাম্প আছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এটি নির্মাণ করেছিল। সেটা সরেজমিন দেখার জন্য কেসিসির ১৬ জনের টিম চট্টগ্রামে যায়। প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান খুলনা প্রকৌশলী ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এবং ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালট্যান্টস (ডিডিসি) লিমিটেড। কেসিসির এ টিমের সঙ্গে কুয়েটের সদস্যরা ছিলেন। চট্টগ্রামের প্রকল্প দেখার পর কেসিসির টিমটি ১০ অক্টোবর রাতে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওয়ানা দেয়। কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেলে কেসিসির টিমটি অবস্থান করে। পাশাপাশি হিমছড়ি, ইনানী, পাটুয়াটেকসহ বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করেন। ১২ অক্টোবর টিমটি খুলনা আসে। এ বিষয়ে একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানান, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাওয়ার বিষয়টি সঠিক এবং এর ব্যয় প্রকল্প থেকে গেছে। তবে পরিবারের খরচের কোনো টাকা প্রকল্প থেকে নেওয়া হয়নি।
কেসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী ও জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পের পরিচালক শেখ মোহাম্মদ মাসুদ করিম বলেন, প্রকল্পের মধ্যে চট্টগ্রামের পাম্প ভিজিটের খরচ ধরা আছে। তবে এর পরিমাণটি নির্দিষ্ট জানি না। তিনি বলেন, কক্সবাজারে অনেক কর্মকর্তা কখনোই যায়নি। তাই সবাই মিলে গিয়েছিলাম। পরিবারের সদস্যদের কোনো খরচ প্রকল্প থেকে নেওয়া হয়নি।
আপনার মতামত লিখুন :