কয়েক দিনের লাগাতার বৃষ্টির প্রভাবে বগুড়ায় বাজারে সবজির দাম বেড়েই চলেছে। বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে মাঠ থেকে সবজি সংগ্রহ করতে না পারায় বাজারে সরবরাহ কমেছে। আর এর সুযোগে ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দিয়েছেন সবজির দাম।
পটোল, বেগুন, পেঁপে, লাউ, শিম ও ঢেঁড়সসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে। পাইকারি বাজারে প্রতি মণে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বেড়েছে প্রতিটি সবজির। কৃষকরা বলছে অতি বৃষ্টির কারণে তাদের সবজি ক্ষেতেই পচে নষ্ট হয়েছে।
আড়ৎদারদের দাবি, বৃষ্টির কারণে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। ফলে বাজারেSet featured image সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে, ক্রেতারা বলছেন, ব্যবসায়ীরা বৃষ্টির অজুহাত দেখিয়ে অতিরিক্ত লাভের আশায় দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ সবজির মোকাম বগুড়ার মহাস্থান হাটের বিভিন্ন আড়ত ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
মোকাম ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতিটি সবজির দাম মণে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহে করলা ১৪০০-১৬০০ টাকা মণ থেকে বেড়ে ২০০০-২২০০ টাকায়, একইভাবে বেগুন ১৭০০-১৮০০ টাকা মণ থেকে বেড়ে ২০০০-২২০০ টাকায়, পটল ১২০০ টাকা থেকে বেড়ে ১৮০০ টাকায়, ঝিঙা ১২০০ টাকা থেকে বেড়ে ১৬০০ টাকায়, বই কচু ১১০০ টাকা থেকে ২২০০ টাকায়, মুলা ১২০০ টাকা থেকে বেড়ে ১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়াও পেঁপে ১০০০ থেকে বেড়ে ২০০০ টাকায়, লতি কচু ১৬০০ থেকে বেড়ে ২০০০-২৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়াও কাঁচামরিচের দাম মাঝে কেজিপ্রতি ১২০-১৪০ টাকা হয়েছিল, এখন তা আবার বেড়ে ১৭০-১৮০ টাকা হয়েছে। বরবটি ৬০ টাকা কেজি থেকে বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস লাউ আগে ছিল ২৪-২৫ টাকা এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩২ টাকা। তবে পেঁয়াজ ও আলু ও মিষ্টি লাউয়ের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
শিবগঞ্জ উপজেলার পার আঁচলাই গ্রামের সবজি বিক্রেতা শাকিরুল ইসলাম জানান, তিনি ৬ মণ করলা নিয়ে এসেছেন। প্রতিমণ ১৮শ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছেন। গত সপ্তাহে তিনি এই করলা বিক্রি করেছেন ১২০০ টাকা মণ দরে। এবার ভালো দাম পেয়েছেন।
তিনি বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে জমিতে কাঁদা-পানি, সেজন্য সবজি সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। এজন্য বাজারে সবজি সংকট চলছে।
বগুড়া সদরের ধাওয়া পাড়া গ্রামের কৃষক এনামুল হক বলেন, বৃষ্টির কারণে অনেক সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। জমিতে কাদা পানি জমে যাওয়ায় সবজি সংগ্রহ করতেও কষ্ট হচ্ছে। এ কারণে বাজারে সবজির দাম বেড়েছে।
মহাস্থান হাটের আড়তদার মিম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী খায়রুল ইসলাম খাজা জানান, বৃষ্টির কারণে পরিবহণ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে এবং মাঠ থেকে সবজি সংগ্রহে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। তাই সবজির সরবরাহ কমে গেছে, যা বাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ।
বগুড়া আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মো. শাহ আলম বলেন, গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলায় ২৪১ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা এই মৌসুমের সর্বোচ্চ।
আপনার মতামত লিখুন :