বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম প্রাণপুরুষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্মকে সাধারণের কাছে আরও সহজ করে পৌঁছে দিতে রবীন্দ্র- প্রয়াণবার্ষিকী পালন করছে ছায়ানট। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ছায়ানট মিলনায়তনে ছায়ানটের আয়োজনে রবীন্দ্র- প্রয়াণবার্ষিকী পালন করা হয়। রবীন্দ্র-প্রয়াণবার্ষিকীতে একক রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন ১১ শিল্পী। ‘শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে’ সম্মেলক গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়।
একক সংগীতের মধ্যে রয়েছে, ‘ভয় হতে তব অভয় মাঝে’ গেয়েছেন মাকসুরা আখতার অন্তরা, ‘আপনি অবশ হলি’ পরিবেশন করেছেন এ টি এম জাহাঙ্গীর, ‘বাঁধন ছেঁড়ার সাধন হবে’ গেয়েছেন সত্যম কুমার দেবনাথ, ‘তোর আপন জনে ছাড়বে তোরে’ পরিবেশন করেছেন আইরিন পারভীন অন্না, ‘আমি মারের সাগর পাড়ি দেব’ পরিবেশন করেছেন তানিয়া মান্নান, ‘নিশি-দিন ভরসা রাখিস’ পরিবেশন করেছেন অভিজিৎ দাস প্রমুখ। ‘সত্যের আহ্বান’ একক পাঠ করেন সুমনা বিশ্বাস।
তবলা বাজিয়েছেন সুবীর ঘোষ ও মৃত্যুঞ্জয় মজুমদার। সেতার ফিরোজ খান, কিবোর্ড রবিন্স চৌধুরী এবং মন্দিরা প্রদীপ কুমার রায়।
উল্লেখ্য, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ বঙ্গাব্দে, সোমবার জন্মগ্ৰহণ করেছিলেন। তার পিতা ছিলেন ব্রাহ্ম ধর্মগুরু দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মাতা ছিলেন সারদাসুন্দরী দেবী। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন পিতা ও মাতার চতুর্দশ সন্তান।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন একাধারে বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে ‘গুরুদেব’, ‘কবিগুরু’ ও ‘বিশ্বকবি’ অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি প্রথম অ-ইউরোপীয় এবং প্রথম এশীয় হিসেবে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হন।
১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট জোড়াসাঁকোর বাসভবনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
আপনার মতামত লিখুন :